যশোর সদর উপজেলার বাদিয়াটোলা গ্রামের কুয়েত প্রবাসী ও বিএনপি কর্মী মেহের আলী হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছে ডিবি পুলিশ। এতে সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার। মামলার তদন্ত শেষে শনিবার আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন ডিবি পুলিশের এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজিব।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো, যশোর নতুন উপশহর ই-ব্লকের মিজানুর রহমানের ছেলে মাহাবুবুর রহমান কোকিল ওরফে আকাশ ওরফে ফয়সাল, মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম রকি, সদরের বাদিয়াটোলা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী শহর আলী ওরফে শের আলী ও তার ছেলে মেহেদি হাসান, আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে তারেক হোসেন, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম দুলালের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন ও ঝাউদিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেহের আলী বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বাদিয়াটোলা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার ত্রিমোহনী রোডের পাশে বাড়ি করার সময় প্রতিবেশী আওয়ামী লীগ সমর্থক শহর আলী তার কাছে চাঁদা দাবি ও গ্রহণ করে। এরপর মেহের আলী কুয়েতে চলে গেলে তার স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ি বসবাস করতেন সেই বাড়িতে। ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই মেহের আলী দেশে ফিরে আসেন। ওই সময় দেশে গণআন্দোলনে যোগ দেন মেহের আলী। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৯ আগস্ট রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে নিজের বাড়ির প্রধান ফটকে তালা লাগাতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন মেহের আলী। এ ঘটনায় আব্দুল মালেক বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ, পরে ডিবি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়।
তদন্তে উঠে আসে নিহত বিএনপি কর্মী মেহের আলীর সাথে প্রতিবেশী আওয়ামী লীগ কর্মী শহর আলীর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। মেহের আলী ও শহর আলী উভয়ে বিদেশে থাকেন। মেহের আলী দেশে ফেরার পর আাওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এতে বিএনপি কর্মী মেহের আলী আওয়ামী লীগ কর্মী শহর আলীর বাড়িতে যেয়ে হুমকি দিয়ে আসেন। শহর আলীর স্বজনরা বিষয়টি তাকে জানান। শহর আলী ও তার ছেলে মেহেদী হাসান বিদেশে থেকে মেহের আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী মেহেদী তার বন্ধু সাজ্জাদের সাথে যোগাযোগ করেন। সাজ্জাদ তার বন্ধু কোকিলসহ অপর আসামিদের সহযোগিতায় মেহের আলীকে গুলি করে হত্যা করেন।
এ মামলার র্দীঘ তদন্তকালে আটক আসামিদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় ওই সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/ টিএ